যেভাবে শুরু হলো প্রাক্তন ছাত্র সমিতির পথ চলা
Mar 4, 2020   /   hmpcs.org

লেখক: মোহিত কুমার দাঁ / ১৯৪১ ব্যাচ
সাধারণ সম্পাদক, ১ম কার্য নির্বাহী কমিটি, প্রাক্তন ছাত্র সমিতি।
প্রথম প্রকাশ: ১৯৯৫ শতবর্ষের স্মরণীকা


১৯৮৩ সালের অক্টোবর মাসের কোন এক দিনে নবাবগঞ্জ হরিমোহন ইনসটিটিউশনের প্রাক্তন ছাত্র শ্রী তরুণ কান্তি মজুমদার আমার কাছে প্রস্তাব দেয় যে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবসর প্রাপ্ত ৪ জন অশীতিপর শিক্ষককে সংবর্ধনা দিতে হবে। প্রস্তাবটি আমার কাছে খুবই ভাল লাগল। ১৮/১১/১৯৮৩ তারিখ নবাবগঞ্জ ষ্টেডিয়ামে তাৎকালীন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক জনাব মইদুল ইসলাম সাহেবের আনুকুল্য লাভে তথায় একটি সভার আয়োজন করি। তাৎকালীন পৌরপতি জনাব এহসান আলী খানের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং ২১/১২/১৯৮৪ তারিখে বিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরে অবসরপ্রাপ্ত অশীতিপর শিক্ষক মন্ডলী সর্ব জনাব মোহাঃ নাইমুল হক, মোহাঃ আমিনুল হক, মোহাঃ গিয়াস উদ্দীনমোহাঃ লুৎফল হক কে প্রাক্তন ছাত্রদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা জ্ঞাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ মর্মে নিম্নলিখিত ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে একটি কার্যকরী কমিটি ও ৩টি উপ পরিষদ গঠিত।

১। জনাব আফতাব উদ্দীন সভাপতি
২। জনাব এহসান আলী খান সহ-সভাপতি
৩। শ্রী মোহিত কুমার দাঁ শিক্ষক সম্পাদক
৪। ডাঃ বুল-বুল-ই গুলিস্থান সহসম্পাদক
৫। জনাব শামশুল হক (এ্যাডঃ) কোষাধ্যক্ষ

ব্যবস্থাপনা উপ-পরিষদ

১। জনাব সুলতান ইসলাম (এ্যাডঃ) আহবায়ক
২। ফিরোজুল ইসলাম সদস্য
৩। শাহজাহান বিশ্বাস সদস্য
৪। মজিবুর রহমান সদস্য
৫। মাহতাব উদ্দিন সদস্য
৬। রকিব উদ্দিন সদস্য
৭। আব্দুল হান্নান হানু (ব্যবসায়ী) সদস্য
৮। ডাঃ বুল-বুল-ই-গুলিস্তান সদস্য
৯। অধ্যাপক দেলসাদ আলী সদস্য
১০। জনাব ইসরাফিল হক সদস্য
১১। শ্রী তরণ কান্তি মজুমদার সদস্য

প্রচার ও যোগাযোগ উপ-পরিষদ

১। জনাব মনিম উদ্দৌলা চৌধুরী আহবায়ক
২। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম সদস্য
৩। শহীদ উদ্দিন আল হাসান সদস্য
৪। জনাব মোঃ মিজানুর রহমান সদস্য
৫। আব্দুল মান্নান সেনটু সদস্য
৬। আব্দুল হান্নান সদস্য

অথ সংগ্রহ উপ-পরিষদ

১। জনাব শামশুল হক (এ্যাডঃ) আহবায়ক
২। ডাঃ মেশবাহুল হক সদস্য
৩। রফিকুল আলম সদস্য
৪। জনাব এহসান আলী খান সদস্য
৫। মতিউর রহমান (ব্যবসায়ী) সদস্য
৬। সুলতানুল ইসলাম (এ্যাডঃ) সদস্য
৭। আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম (ব্যবসায়ী) সদস্য
৮। জনাব ফিরোজুল ইসলাম (এ্যাডঃ) সদস্য
৯। শ্রী ফালগুনী মজুমদার (এ্যাডঃ) সদস্য
১০। রূপেন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী (এ্যাডঃ) সদস্য
১১। জনাব মঞ্জুর রহমান (শিক্ষক) সদস্য
১২। ইয়াসিন আলী সদস্য
১৩। একরামুল হক (ব্যবসায়ী) সদস্য
১৪। গোলাম জাকারিয়া সদস্য
১৫। মজিবুর রহমান সদস্য

সিদ্ধান্ত মোতাবেক অতীব মর্যাদা সহকারে এ ভাব গম্ভীর পরিবেশের মধ্য উক্ত ৪ জন শিক্ষা গুরুকে এক ঐতিহাসিক প্রাক্তন ছাত্রদের সমাবেশে প্রাণ ঢালা সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয। আমরা এই ৪ জন শিক্ষাগুরুকে হারিয়েছি। তাঁদের আত্মার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, তাঁরা জান্নাত বাসী হন এই আমাদের প্রার্থনা।

১৯৮৪ সালে প্রাক্তন ছাত্রদের আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রবীণ শিক্ষক নাইমুল হকের সাথে ছাত্র ফালগুণী মজুমদার ও তরুণ মুজমদার
১৯৮৪ সালে প্রাক্তন ছাত্রদের আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রবীণ শিক্ষক নাইমুল হকের সাথে ছাত্র ফালগুণী মজুমদার ও তরুণ মুজমদার। উল্লেখ্য যে, এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করার প্রয়োজনীয়তা থেকেই প্রাক্তন ছাত্র সমিতি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়

অতঃপর আমাদের নবাবগঞ্জের সন্তান যারা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছেন, ঈদের পরের দিন এক বার্ষিক পুনর্মিলনীয় আয়োজন করা হয় এবং এ উপলক্ষেই ১৯৮৪ সালে হরিমোহন প্রাক্তন ছাত্র সমিতি গঠিত হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, ১৯৮৪ সাল হতে ১৯৯৪ সালের প্রথম পাদ পর্যন্ত আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মরহুম আফতাব উদ্দিন সাহেব এবং মোহিত কুমার দাঁ যথাক্রমে সভাপতি ও সম্পাদক হিসেবে সমিতির দায়িত্ব পালন করে আসেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রাক্তন ছাত্র বিভিন্ন সময় অন্যান্য পদে অবস্থান করে দায়িত্ব পালন করেন।

এই দীঘ ১০ বছরের কর্মকান্ডের ভিতর উল্লেখযোগ্য ২৯/০৯/১৯৮৫৩০/০৮/১৯৮৭ তারিখে দুটি পৃথক বার্ষিক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে হরিমোহনের কৃতি ছাত্র ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডঃ জহুরুল হক ও অত্র স্কুলের সেরা ক্রীড়া বিদ আলহাজ্ব তসিকুল ইসলাম সাহেবকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

এ ছাড়াও ১৯৮৪ সালে হরিমোহনের ছাত্র আমাদের গৌরব তথা লোক সংগীত অঙ্গনের গৌরব গম্ভীরা গায়ক কুতুবুল আলম ও রকিবুদ্দিন কে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। সেই ১৯৮৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত যথারীতি ঈদুল আযহার পরের দিন বার্ষিক পুনর্মিলনী উদযাপিত হয়ে আসছে।